কুড়িগ্রামে উপকারী জলকপাট এখন মরণফাঁদ

সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম-খরা মৌসুমে কৃষি জমিতে পানির অবাধ ব্যবহার এবং বন্যাকালীন সময়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য তৈরিকৃত জলকপাটটি এখন কৃষক ও এলাকার মানুষের জন্য মরণফাঁদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার কাজ না করায় কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলা কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার পাত্রখাতা এলাকায় ১২টি গেট সম্বলিত জলকপাটটি এখন আলোচনার খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা যায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছরে চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীরে পানিপ্রবাহ সামঞ্জস্য রাখতে তিস্তা নদীর খালে ১২টি গেট সম্বলিত জলকপাটটি নির্মাণ করে দেয়। গুরুত্বপূর্ণ এই জলকপাট সঠিকভাবে সংস্কার ও দেখভাল না করায় গেটগুলোর কপাট ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে। দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে নেমেছে ধ্বস। ফলে স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারিয়ে এটি পানি প্রবাহের জন্য একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে এই অকেজো জলকপাট দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বন্যা ও বৃষ্টির ফলে আটকে থাকা পানি বের হতে না পেরে কৃষকের সমস্ত ফসল তলিয়ে যায়। পানিবন্দি হয়ে পরে কয়েকশ বাড়িঘর। সরেজমিনে দেখা যায়, চিলমারীসহ পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার একাংশ, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর,কাশিম বাজার ও বেলকার কিছু অংশ এবং চিলমারী শহরসহ প্রায় দুই শতাধিক গ্রাম ও কয়েকটি বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ ছিল এই জলকপাটটি। এখন ঠিকভাবে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ। পাত্রখাতা এলাকার রঞ্জু, শহিদুল, রাজ্জাকসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এই জলকপাটটির কারণে কৃষকের শত শত হেক্টর ফসল পানিতে বিনষ্ট হচ্ছে। জলবন্দি হয়ে পড়ছে চিলমারী সদরের শত শত বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আমরা গত দুই বছর ধরে নতুন জলকপাট নির্মাণের জন্য পাউবো অফিসে ধর্ণা দেয়া, মানববন্ধনসহ নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আমাদেরকে আশ্বাস দেয়া হলেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি দেখছি না। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন নতুন জলকপাট নির্মাণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে বলেন, গেটের সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণে মেকানিক্যাল টিমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আশা করছি এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হবে। চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ