রোববার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় থাকবে সর্বোচ্চ আদালত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজও ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষ সুপ্রিম কোর্ট চত্বর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় আগামী রোববার (২৯ মে) থেকে নিরাপত্তা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে করা বৈঠকে করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়। এ বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. বজলুর রহমান, পুলিশের রমনা অঞ্চলের ডিসি, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার ও সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী রোববার থেকে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের গেটগুলোও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীরা যাতে সুপ্রিম কোর্টে নির্বিঘ্নে, স্বাচ্ছন্দে থাকতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আদালত অঙ্গনে যাতে কোনো বহিরাগত লোক ঢুকতে না পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। আজ সকালেও দোয়েল চত্বর থেকে মিছিল বের করে ছাত্রদল। মিছিল নিয়ে টিএসসি হয়ে শাহবাগের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন নেতাকর্মীরা। ছাত্রদলের দাবি, চারুকলার সামনে এলে তাদের মিছিলে ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগ। এর আগে গত মঙ্গলবারের হামলার প্রতিবাদে এদিন পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মিছিল করে সংগঠনটি। এ সময় বাধার মুখে পড়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের অনেকে দোয়েল চত্বর ছাড়িয়ে জাতীয় ইদগাহের পাশের গেট দিয়ে হাইকোর্টের ভেতরে ঢুকে পড়েন। সেখানেও ছাত্রলীগের চড়াও হওয়ার অভিযোগ আনে ছাত্রদল। এসময় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হওয়ার দাবি ছাত্র সংগঠনটির। তবে ছাত্রলীগ নেতকর্মীদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসকে বিশৃঙ্খল করার চেষ্টা করছে ছাত্রদল। এদিকে, হাইকোর্ট এলাকায় ছাত্রলীগের শোডাউন ভিডিও করার সময় একজনের ওপর চড়াও হয় নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়াও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ এনেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিএনপিপন্থী আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার। এ বিষয়ে তৈমূর আলমের মেয়ে আইনজীবী ব্যারিস্টার মারিয়াম খন্দকার বলেন, আমার বাবা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করে পরাজিত হন। পরে দল (বিএনপি) থেকে বহিষ্কার হন। এরপরও এভাবে গাড়িতে হামলার ঘটনা আশ্চর্যজনক। তিনি বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের মতো এলাকায় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রলীগ কীভাবে হামলা করল? এদিকে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে আশ্রয় নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কর্মী নাহিদ চৌধুরী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে এসে ছাত্রলীগের এমন হামলার প্রতিবাদে বিএনপির আইনজীবীরা তাৎক্ষণিক মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।

সর্বশেষ সংবাদ