রংপুরে যৌতুকের জন্য বাবা মেয়েকে নির্যাতন

রংপুরে যৌতুকের টাকা পরিশোধ না করায় স্বামী- শ্বাশুরীর হাতে মোছাঃ রুজিনা বেগম (২৫) ও তার বাবা রাজমিস্ত্রি মোঃ রেজাউল করিম (৫৫) কে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার নগরীর ৩৩ নং ওয়ার্ডের হোসেন নগর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভূক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ২০১২ইং সনে এপ্রিল মাসের রংপুর নগরীর ৩২নং ওয়ার্ড এর ধর্মদাস মসজিদপাড়া (প্রাইমারী স্কুল সংলগ্ন) এলাকার মোঃ রেজাউল করিম এর একমাত্র কন্যা মোছাঃ রুজিনা বেগম সাথে ৩৩নং ওয়ার্ড হোসেন নগর এলাকার মোঃ মোতাল্লেব হোসেনের ১ম পুত্র মোঃ শাহজাহান আলী (৩২) এর সহিত বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে পাষন্ড স্বামী ও তার শ্বাশুরী মোছাঃ শাহার বানু। এর প্রেক্ষিতে বাবা রাজমিস্ত্রি রেজাউল তার সাধ্য মতে বিভিন্ন সময় এক লক্ষ আশি হাজার টাকার দেয়। তার পরেও স্বামী ও তার শ্বাশুরী যৌতুকের দাবি করে নির্যাতন করতেই থাকে। ইতিপূর্বে নির্যাতনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হলে রংপুর কোতয়ালী থানার এস.আই মোঃ শাহাদৎ এর উপস্থিতিতে একটি শালিসি বৈঠকে পরবর্তীতে মেয়েকে যৌতুকের জন্য চাপ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন না করা হবে মর্মে মুচলেকা দিয়ে স্বামী-শ্বাশুরী অঙ্গিকার করে।
সংসার চলাকালীন পরবর্র্র্তীতে আবারও যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী-শ্বাশুরীর হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আবুল কাশেমের উপস্থিতিতে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়।
মঙ্গলবার আবারও মেয়েকে নির্যাতনের খবর শুনে মেয়ের বাড়ী গেলে বাবার উপস্থিতিতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী ও শ্বাশুরী রুজিনার উপর চড়াও হয়। এতে বাবা প্রতিবাদ করলে বাবাকেও মার-ধর করে দাঁত ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এ খবর পেয়ে মেয়ের দুই ভাই স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে বাবা রেজাউল হাসপাতালের নীচতলার ডেন্টাল ওয়ার্ডে ও মেয়ে রুজিনা চার তলার ১৬নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শাহাদাত হোসেন মমিন।
এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার রুজিনা আক্তার বলেন, যৌতুকের জন্য আমাকে প্রায় সময়ই নানান হুমকি ও মারধর করে স্বামী ও শ্বাশুড়ী মারধর করে। আজকে আমার বাবাকেও মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই।
যৌতুকের জন্য নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত স্বামী শাহজাহান আলী তা অস্বীকার করে বলেন, শ্বশুড় ও তার লোকজন আমার বাড়িতে এসে আমার মা ও আমাকে মারধর করে তার মেয়েকে নিয়ে গেছে। কিন্তু কেন মারধর করেছে তার কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেনি।