পানিশূন্য তিস্তা-কষ্টে দিনাতিপাত করছেন জেলেরা

মোঃ ফয়সাল আহমেদ, প্রতিনিধি, ডিমলা (নীলফামারী)-তিস্তা ব্যারেজ থেকে শুরু করে তিস্তার বিস্তীর্ণ এলাকা এবং সেচ প্রকল্পের নালায় এই মৌসুমে পানি না থাকায় মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে তিস্তাপাড়ের হাজারও জেলে । পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিন পাড় করছেন তারা। সেই সাথে কর্মহীন হয়ে পড়েছে চরে খেটে খাওয়া হাজারো সাধারন মানুষ।

ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারে ফলে প্রতি বছর তিস্তাসহ কয়েকটি নদী পানিশুন্য হয়ে পড়ে। প্রতিবছর ৩ থেকে ৪ মাস নদীতে পানি না থাকায় এসব জেলে মাছ ধরতে না পেরে পরিবার নিয়ে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করেন। তিনমাস পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা সুদ নিয়ে জীবন-যাপন করেন। অনেকে দিন মজুরী, কেউবা জাল সেলাই করে উপার্জনের চেষ্টা করেন।
তিস্তা নদীতে পানি সংকটে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বৈরালি মাছ। ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সুস্বাদু এই মাছটি জেলেদের জালে আর আগের মতো ধরা পড়ে না। যেটুকু পাওয়া যায় বাজারে তা বিক্রি হয় অত্যধিক চড়া মূল্যে। তিস্তা পাড়ের কিছু জেলে সারা দিন দুই এক কেজি করে ছোট বড় বৈরালি মাছ ধরছেন। সেই বৈরালি মাছ মুহুর্তেই তিস্তা পাড়ে ৪ শত থেকে ৫ শত টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। তিস্তায় ভরপুর পানি থাকলে প্রচুর পরিমানে বৈরালি মাছ পাওয়া যেত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা নদীর ব্যারাজের উজানের অংশে সামান্য পানি আছে। ব্যারাজের ভাটিতে পানি নেই। ব্যারাজসংলগ্ন এলাকায় বেশকিছু জায়গা জুড়ে চলছে মৃদু পানির স্রোত । সেই স্রোতেই মাছ ধরার চেষ্টা করছে জেলেরা। তিন্তা ব্যারেজ এলাকায় মাছ ধরা নিষেধ থাকলেও কয়েকজন জেলে জীবিকা নির্বাহর জন্য ছোট নৌকা নিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় জেলে রাশিদুল ইসলাম বলেন, তিস্তা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষের সংখ্যা ২০ হাজারের কম নয়। বর্তমানে তিস্তায় চারমাস পানি না থাকায় বেশীর ভাগ জেলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডেও কর্তব্যরত কর্মকর্তা জানান, প্রতিবছরে এই সময় তিস্তা নদীতে এক হাজার থেকে বারোশত কিউসেক পানি থাকে। সাধারনত নদীতে পানি কম থাকায় মাছের পরিমান ও কম হয়।
ডিমলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, তিস্তা নদীতে তিন থেকে চার মাস পানি না থাকায় জেলেরা কষ্টে দিন কাটান তাই জেলেদের তালিকা প্রনয়ন করে তাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

 

সর্বশেষ সংবাদ