চলনবিলে মাছ ধরার চাঁই(ফাঁদ) বিক্রির ধুম

এ,এইচ,খোকন চলনবিল প্রতিনিধিঃ বাঁশ ও তালের ডাগরের সমন্বয়ে তৈরী বিশেষ ধরনের ফাঁদকে চাঁই বলে ৷ চলনবিল এলাকায় নতুন জোয়ারের পানি ঢুকতে শুরু করেছে ৷পানির সাথে আসছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ ৷ এই এলাকার বেশীর ভাগ বাড়ীতে মাছের অভাব মেটাতে একটি বা দুটি  চাঁই থাকলেই যথেষ্ট ৷ চলনবিল এলাকায়  বর্ষার শুর মাছ ধরার উপকরণ চাঁই তৈরী ও  বিক্রি জমে উঠেছে চলনবিলের বিভিন্ন  হাট-বাজারে । এখানকার তৈরি এসব উপকরণ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গুণগত মান ভালো হওয়ায় আশানুরুপ দাম পাচ্ছেন চাঁইশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। চলনবিলের নিন্ম আয়ের পরিবারগুলো বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছে এই চাঁইশিল্প।
জানা গেছে, মাছ ধরার উপকরণ-  চাঁই খোলসুন, ধুন্দি, বানা, খাদন, খালই, বিত্তি ও ভাইর নামে পরিচিত।
বাঁশ ও তালের ডাগুরের আঁশকে পুঁজি করে তৈরি এই চাঁই বর্ষাকালে বিভিন্ন জলাশয়ে ছোট ছোট মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত হয়। হাতে তৈরি এসব মাছ ধরার ফাঁদ তৈরি করে প্রতিটি পরিবার দিনে এক থেকে দেড়  হাজার  টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে। পরিবারের সকলেই এই ফাঁদ তৈরির কাজে জড়িত থাকে।
এসব ফাঁদ তৈরির সঙ্গে জড়িতদের কথা বলে
জানা যায়,  মাছ ধরার সমগ্রী তৈরি করতে বেশ কয়েক প্রকার উপকরন প্রয়োজন হয়। যেমন, তল্লা বাঁশ, তালের ডাকুর, দা, কান্তি এবং আঁশ ছড়ানোর জন্যে বাঁশের চুঙ্গি ৷
চলনবিল অঞ্চলের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা, চাঁচকৈড়, নয়াবাজার, হাজির হাট, নাজিরপুর হাট সহ  বড়াইগ্রাম, সিংড়া ও তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন হাটে এসব উপকরণ   বিক্রি হচ্ছে। এক জোড়া চাঁই -খোলসুন আকার ভেদে ৪’শ ৫০ থেকে ৫’শ টাকা, বৃত্তী ৩’শ টাকা, ভারই ৩’শ টাকা, ধন্দি ২’শ ৫০ টাকা, বানা ৪’শ টাকা, খাদন সাড়ে ৪’শ টাকা ও খালই বিক্রি হচ্ছে ২’শ টাকায়।
চলনবিলে বসবাসরত নিম্ন আয়ের কয়েক হাজার মানুষ হস্ত চালিত এই শিল্পের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করলেও এসব শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে  সরকারি উদ্যোগ নেই। বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তির কাছ থেকে চড়াসুদে ঋণ নিয়ে তারা কোন রকমে তাদের পেশাকে টিকিয়ে রেখেছেন। সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা পেলে বিশাল এই জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে আরো লাভবান হবে।

সর্বশেষ সংবাদ