শ্রীবরদীতে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত

মো. আব্দুল বাতেন, শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি: শ্রীবরদীতে ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি শ্রীবরদী উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভারী বর্ষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে পানি বন্দী হয়েছে কমপক্ষে ১৫ হাজার পরিবার। প্লাবিত গ্রাম গুলোর কাঁচা ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, রোপা আমন ধানের বীজতলা, সবজি, পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটবে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, কয়েকদিনের থেমে থেমে চলছে ভারী বর্ষণ। সেই সাথে দফায় দফায় পাহাড়ি ঢলে শ্রীবরদীর সিংগাবরুনা, কাকিলাকুড়া, তাতিহাটি, গোশাইপুর, রাণীশিমূল, খরিয়াকাজিরচর, ভেলুয়া, গড়জরিপা, শ্রীবরদী সদর, কুড়িকাহনিয়া ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্লাবিত গ্রামের রাস্তাঘাট, আমন ধানের বীজতলা ও সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে চার শতাধিক পুকুরের মাছ। এতে গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। বন্যার কারণে অধিকাংশ বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু বিদ্যালয়ের ভিতরেও পানি ঢোকেছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিন গেলে দেখা যায়, সিংগাবরুনা ইউনিয়নের কর্ণঝোড়া, পাঁচমেঘাদল, ঝুলগাও, রাণীশিমুল ইউনিয়নের বাঘহাতা, চেঙ্গুতাই, হাঁসধরা, বালিজুরী, ভায়াডাঙ্গা দক্ষিনপাড়া, কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের কাকিলাকুড়া তিনঘড়িপাড়া, ভুতনিকান্দা, খোশালপুর, তাতিহাটি ইউনিয়নের পুটল, গেরামারা, ঘোনাপাড়া, বকচর, ষাইটকাকড়া, জানকিখিলা, শালামারা, গোশাইপুর ইউনিয়নের ধাতুয়া, গিলাগাছা, গড়গড়িয়া, মাটিয়াকুড়া, ভেলুয়া ইউনিয়নের চকবন্দি, কাউনেরচর, ঝগড়ারচর, লক্ষীডাংরী, চরহাবর, বারারচর, বলিদাপাড়া, চরশিমূলচুরা, আকন্দপাড়া, চাংপাড়া, গড়জরিপা ইউনিয়নের চাউলিয়া, শৈলারপাড়, কাকলেরবেড়, খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়নের রুপারপাড়া, লঙ্গরপাড়া, রূপারপাড়া, বন্ধ বৈষ্ণবেরচর, দক্ষিণ খরিয়া, কুড়িকাহনিয়া ইউনিয়নের কুরুয়া দক্ষিণপাড়া, গড়খোলা, ঘাটিপাড়া, শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের কোকড়ারপাড়া, নয়ানীপাড়া, পুরান শ্রীবরদী, নবীনগর, মাঞ্জালিয়া, বালুঘাটসহ প্রায় ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দি এলাকার অনেকে জানান, বন্যার পানিতে তাদের এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। তলিয়ে গেছে আমন ধানের বীজতলাসহ সবজি ক্ষেত। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। গোশাইপুর ইউনিয়নের গিলাগাছা গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আমার ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে এছাড়াও পুকুরের মাছ ও সবজি ক্ষেত পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। বীজতলা নষ্ট হওয়ায় আমি চরম দুশ্চিতায় আছি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরো অবনতি হওয়ার আশংকা করছেন বন্যার্ত এলাকার লোকজনেরা। উপজেলা মৎস্য অফিসার সাইদুর রহমান বলেন, পানিতে প্রায় চারশত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় নব্বই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ