ছাগলনাইয়ায় সালিশি রায়ের ক্ষোভে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর আত্মহত্যা

আবদুল্লাহ রিয়েল, ফেনী-বিচারের নামে সালিশদারদের অবৈধ রায়ে ক্ষোভে অপমানে আত্মহত্যা করেছে অন্তঃসত্ত্বা এক তরুণী। তার নাম মায়না আক্তার ফেন্সি (১৮)। সে মাটিয়াগোদা গ্রামের আলি নেওয়াজের বাড়ির জয়নাল আবেদিনের মেয়ে। ফেন্সি দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। মঙ্গলবার (৩০মে) গভীর রাতে সে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়।
বুধবার সকালে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ।
ওসি ( তদন্ত) আবুল খায়ের শেখ জানান, মাটিয়াগোদা গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে হানিফ ওরফে বোমা হানিফ ফেন্সিকে ফুঁসলে প্রেমের ফাঁদে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এতে দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ফেন্সি। গত সোমবার তারা ফেনীতে গিয়ে বিয়ে করেন। বিষয়টি এলাকা জানাজানির পর হানিফ বিয়ের কথা অস্বীকার করেন।
ফেন্সির পরিবারের চাপে মঙ্গলবার ফেন্সির দাদার বাড়িতে সালিশি বৈঠক বসেন হানিফ।
ফেন্সির মা মনোয়ারা বেগম বলেন, সালিশদার মহামায়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাজান মিনু, মীর কাইয়ুম, কাইয়ুম মেম্বার, মিজি আলম, আব্দুল, সিরাজসহ কয়েকজন গ্রাম্য মাতাব্বর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
রাত সাড়ে ১০ টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠকে সালিশদাররা আমাদের কোন কথাই শুনতে চায়নি। তারা সাদা কাগজে আমাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। তাদের সামনে বোমা হানিফ এবং তার ভাগনি রহিমা আমার মেয়েকে একচেটিয়া মিথ্যা অপবাদ দিতে থাকেন। সালিশদাররা বোমা হানিফের ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করে বিয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে চলে যান।
ক্ষোভে অপমানে রাতেই আত্মহত্যা করে মায়ানা আক্তার ফেন্সি।
তার বোন সীমা জানান, ফেন্সি ক্লাস সেভেন পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিল। দারিদ্র্যতার কারনে ২ ভাই ৩ বোন কেউ বেশী লেখাপড়া করতে পারেনি। তিনি আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।
স্থানীয় মেম্বার জমির উদ্দিন বাবু বলেন, সালিশদারদের অবৈধ বিচারে প্রাণ গেছে ফেন্সির।
ওসি আবু জাফর মোহাম্মাদ ছালেহ জানান, এ ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করেছে ফেন্সির মা মনোয়ারা বেগম। মামলায় বোমা হানিফসহ সালিশদারদের আসামি করা হয়েছে।
তবে আওয়ামীলীগ নেতা শাহাজান মিনু বলেছেন, প্রতিপক্ষ তাদের ফাঁসাতে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ৪০ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা বিয়ে বিচ্ছেদের রায় দেয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। সালিশদাররা বলেছেন, বিয়ের কাবিন হাতে আসার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ