হাঁটু গেড়ে বসে বিয়ে বা প্রেমের প্রস্তাব দেয়ার রহস্যটি জানেন কি?

হাঁটু গেড়ে বসে প্রেমের প্রস্তাব দেয়া সিনেমাতে দেখেছেন নিশ্চয়! তবে এমনটি শুধু নাটক বা সিনেমাতেই হয় না বাস্তব জীবনেও ঘটে এমন রোমাঞ্চকর ঘটনা আমাদের অনেককেই প্রেম প্রেম খেলায় পড়তে হয় বিড়ম্বনায় কে আগে প্রস্তাব দেবে, কে আগে বলবেভালোবাসি নিয়ে চলে প্রেমিকপ্রেমিকার অস্থিরতা, রোমাঞ্চ  

বাঙালি সংস্কৃতিতে যদিও বিষয়টি এমন নয়, তবে পাশ্চাত্যে বিয়ের ঐতিহ্যবাহী প্রস্তাবে নারীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বিয়ের প্রস্তাব দেন পুরুষরা। হয়তো ওই পুরুষের হাতে তখন সদ্য ফোটা কোনো লাল গোলাপ অথবা উপহার হিসেবে থাকে একটি আংটি। নারীর যদি প্রস্তাবে সম্মতি থাকে তবে তিনি সেই গোলাপ অথবা আংটিটি গ্রহণ করেন। তারপর তোমিয়া বিবি রাজি কিয়া করেগা কাজী

কিন্তু কেন এক হাঁটু গেড়ে বসে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়? দুর্ভাগ্যক্রমে, এই রোমান্টিক অঙ্গভঙ্গির ইতিহাস বা উৎপত্তি সম্পর্কে কেউই একমত নন

কিন্তু কয়েকটি তত্ত্ব থেকে এই ভঙ্গির বিষয়ে প্রতিশ্রুতির ধারণা পাওয়া যায় মধ্যযুগে সৌজন্যতা তখনো ছিল আধুনিক বিয়ের প্রস্তাবের ভঙ্গিকে মধ্যযুগীয় শ্রদ্ধার রীতির সংস্করণ বলা যেতে পারে সেসময় অনেক আনুষ্ঠানিক ধর্মানুষ্ঠান এবং শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে হাঁটু গেড়ে বসার রীতি ছিল

মধ্যযুগীয় অনেক শিল্পকর্ম এবং সাহিত্যে দেখা যায়, শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত নাইটরা শাসকের প্রতি এভাবে শ্রদ্ধা সম্মানের নিদর্শন প্রকাশ করতো অথবা অভিজাত নারীর সামনেও এভাবে হাঁটু গেড়ে বসে শাশ্বত বশ্যতা শ্রদ্ধা প্রকাশ হিসেবেভদ্র ভালোবাসাপ্রকাশ করতো

তবে শুধুমাত্র মধ্যযুগীয় আচারঅনুষ্ঠানই এর সম্ভ্যাব্য ব্যাখা নয়। এখানে ধর্মেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়। আমাদের এই পৃথিবীতে বিভিন্ন ধর্ম যেমন ইসলাম ধর্ম, হিন্দু ধর্ম এবং খ্রিষ্টান ধর্মে স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ এবং অনন্ত শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য হাঁটু গেড়ে বসে প্রার্থনা রয়েছে

ফলে স্বাভাবিক ব্যাখ্যাটা এরকমযখন আপনি আপনার প্রিয়জনের সম্মুখে এক হাঁটু গেড়ে বসে আংটি কিংবা একটি গোলাপ ফুল দিয়ে তাকে প্রপোজ করবেন তখন সে শুধু আপনাকে ভালোই বাসবে না, আপনার কাছ থেকে সম্মানও বোধ করবে তখন প্রেমিকা বুঝতে পারবে প্রেমিকের চোখে সে শ্রদ্ধার পাত্রী আর তাতে দুজনার বিশ্বাস আর ভালোবাসার জায়গাটাও হবে আরো অটুট

সর্বশেষ সংবাদ