ফসলি জমিতে পুকুর খনন অব্যাহত থাকায় কালাইয়ে ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে ফসলি জমি

কালাই(জয়পুরহাট)প্রতিনিধি: মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে উত্তরাঞ্চলের শস্য ভান্ডার খ্যাত জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ের বিভিন্ন মৌজায় প্রশাসনের নাকের ডগায় ফসলি জমির মাটি কেটে নতুন নতুন পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে গত দু’বছরে অন্তত দুই শ’ বিঘা ফসলি জমি পুকুরে পরিণত হয়েছে। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দেশের খাদ্য ঘাটতিতে প্রভাব পরবে এমন আশঙ্কা স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগের। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কাজের পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য সচেতন মহল প্রশাসনের আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সরকারি নির্দেশ অমান্য করে প্রশাসনর অনুমতি ছাড়াই গত ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ফসলি জমির মাটি কেটে নতুন নতুন অন্তত ৫৬টি পুকুর খনন করা হয়েছে। এ পুকুরগুলোর পরিমান ২০ শতক থেকে ২২ বিঘা পর্যন্ত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পুকুরের তালিকায় রয়েছে- পৌরসভার দুরুঞ্জ মৌজায় প্রয়াত মিজানুর রহমান খাজার ১০ বিঘা পুকুর, বৈরাগীরহাট সাউথ পোল হিমাগারের ব্যবস্থপনা পরিচালক (এমডি) করিম নেওয়াজের ওই হিমাগার সংলগ্ন উত্তর পাশের ১৯ বিঘা পুকুর, মাত্রাইয়ের বেলাল হোসেনের ইন্দাহার গ্রামে মাত্রাই-গোবিন্ধগঞ্জ সড়কের দক্ষিণ পাশে ২১ বিঘা পুকুর, মাত্রাই-বিয়ালা সড়কের উভয় পাশে আব্দুর রাজ্জাকের ৬ বিঘা পুকুর, মাত্রাই গ্রামের মুক্তারের ৩ বিঘা পুকুর একই গ্রামের ফকরুলের ৬ বিঘা এবং মাত্রাই-কালাই সড়কের পশ্চিম পাশে নাজমুল ফকিরের ৪ বিঘা পুকুর, আপলাপাড়া গ্রামের আলহাজ¦ আব্দুল কাদের পুনট-মোসলেমগঞ্জ সড়কের পূর্ব পাশে উদয়পুর মৌজায় ৭ বিঘা পুকুর, জিন্দারপুর ইউনিয়নের আতাহার-বামনগ্রামের নারায়নের ২২ বিঘা পুকুর, হারুঞ্জা গ্রামের মোজাম্মেলের ১২বিঘা পুকুর, জমিনপুর ওয়ারেছের ৬ বিঘা পুকুর।
এ ব্যাপারে সাউথ পোল হিমাগারের ব্যবস্থপনা পরিচালক (এমডি) করিম নেওয়াজের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১৮ বিঘা ফসলি জমির মাটি কেটে নতুন ৪টি পুকুরের খনন কাজ শেষে সেগুলোতে মাছ চাষ শুরু করা হয়েছে। হ্যাচারির জন্য আরও কিছু নতুন পুকুর খননের ইচ্ছেও আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেজাউল করিম জানান, ফসলি জমি মাটি কেটে পুকুর খনন করায় ফসলি জমি হ্রাস পাচ্ছে। এতে ফসলের উৎপাদন কমবে। প্রশাসন আন্তরিকতার সাথে পদক্ষেপ নিলে ফসলি জমিতে পুকুর খননের প্রবণতা কমবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আফাজ উদ্দিন বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খনন আইনগতভাবে নিষিদ্ধ কাজ। তবে নতুন পুকুর খননের জন্যে কেউ আমার কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়নি।

সর্বশেষ সংবাদ