বান্দরবানে বোমাং সার্কেলের ঐতিহ্যবাহী রাজপূন্যাহ উৎসব শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর)। খাজনা আদায়ী উৎসব রাজপূণ্যাহের ১৪০ তম আয়োজন এটি। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন মৌজার প্রধানরা প্রজাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা খাজনা রাজাকে দিয়ে থাকেন। এবারের এ রাজপূণ্যাহ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত থাকবেন বলে কতা রয়েছে।
বোমাং রাজপুত্র বনি মারমা জানান, বোমাং সার্কেল চিফ বোমাংগ্রী উ উ চ প্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে রাজপূন্যাহ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক (এমপি), পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং এমপিসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী সকাল ৯টায় অতিথি সংবর্ধনা, সাড়ে ৯টায় অতিথিবৃন্দের আসনগ্রহণ, ১০টায় সম্মানিত অতিথিদের সম্ভাষণ, দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিক রাজস্ব আদায় ও ঐতিহ্যবাহী সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাত ৮টায় প্রীতি নৈশভোজ ও ১০টায় রাজবাড়ি মাঠে উম্মুক্ত যাত্রা অনুষ্ঠিত হবে বলে রাজবাড়ী সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে বান্দরবানের রাজপূণ্যাহ মেলাকে ঘিরে বান্দরবানে পর্যটকের ঢল নেমেছে। বৃহস্পতিবার থেকে বান্দরবানের কোনও হোটেল মোটেলের সিট খালি নেই বলে জানান বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ।
বান্দরবান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবারের মেলায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে আমাদের বান্দরবানের নেতাকর্মীদের মধ্যে অন্যরকম আমেজের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ মেলায় আমাদের প্রাণপ্রিয় পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীও থাকবেন। এতে করে আশা করছি এবারের এ খাজনা আদায়ী উৎসব অন্যান্য বারের চেয়ে ব্যতিক্রম হবে।’
এদিকে রাজপুত্র বনি বলেন, ‘এবার ১৪০তম রাজপূণ্যাহ হলেও এটি আমার পিতার চতুর্থ রাজপূণ্যাহের আয়োজন। এটি শুধু আমার বাবা নয়, অতীতে যারা রাজা ছিলেন তারাও করেছেন। ভবিষ্যতে যারা রাজা হবেন তারাও করবেন। এটি আমাদের রাজবংশের ঐতিহ্য।’
এদিকে হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সেক্রেটারি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘রাজপূণ্যাহই শুধু নয়, সরকারি ছুটি এবং ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়া সব কিছুরই প্রভাব পড়েছে এ মৌসুমে। ১০–১২দিন আগে থেকেই ২১ তারিখের বুকিং হয়ে গেছে। বর্তমানে আমাদের এখানে কোনও সিট খালি নেই। এ মাসের শেষ পর্যন্ত মোটামুটি বুকিং রয়েছে। তবে সরকারি অফিস খোলার দিনে কিছু কিছু হোটেলে সীমিত সংখ্যক সিট খালি রয়েছে।’
বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, ‘মেলা ও শীতের ছুটি উপলক্ষে বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক আসছেন। পর্যটকের যেন কোনও সমস্যা না হয় সেজন্য এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া মেলাতেও যেন কোনও রকম অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে সে জন্য সেখানেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক মোতায়েন করা হবে।’