জায়লস্করে এক অত্যাচারী পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ট প্রতিবেশীরা

ফেনী প্রতিনিধি: দাগনভূঞার জায়লস্কর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের সাবেক এক পুলিশ কনস্টেবলের অত্যাচারী পরিবারের নানা অত্যাচারে অতিষ্ট আর জিম্মি হয়ে আসছে তার প্রতিবেশী ৪টি পরিবার। তবে ভিন্ন একটি সুত্র থেকে জানা গেছে, ওই বাড়ীর অন্য প্রতিবেশীরাও এদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে আসছে। এরা জায়লস্কর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের অছি মিয়া বাড়ীর বাসিন্দা। এ অত্যাচারী পরিবারের অত্যাচারী সদস্যরা হলেন সাবেক পুলিশ কনস্টেবল মৃত এমদাদ উল্যাহর ছেলে এতোয়ার হোসেন আকাশ ওরফে শিক্ষিত বেয়াদব, স্ত্রী তফুরা বেগম ওরফে তুফানী বেগম ও পুত্র বধু তাছলিমা আক্তার রতœা। মৃত এমদাদ উল্যাহর এ পুত্র ও পুত্র বধু উচ্চ শিক্ষিত, সরকারি চাকুরিজীবি তথা ব্যাংকার। কিন্তু এদের সামাজিক কর্মকান্ড মূর্খতা আর অত্যাচারী চরিত্রে ভরপুর। মাতা, পুত্র ও পুত্র বধু মিলে এলাকার সাধারণ মানুষকে বিগত বহু বছর যাবত নানা বেয়াদবি ও অনৈতিক দূরাচরণে অতিষ্ট করে আসছে। এতে স্থানীয় গণমানুষ এ মাতা-পুত্রকে তুফানী বেগম ও শিক্ষিত বেয়াদব উপাধি দিয়েছে।

এ অত্যাচারী পরিবারের প্রতিবেশী মৃত সাহাব উদ্দিন, মৃত আবদুল ওয়াদুদ, মাঈন উদ্দিন সবুজ ও মহি  উদ্দিন মধুর পরিবার বর্গ বাড়ীর দক্ষিণ পার্শ্বে পাকা দালান ঘর নির্মানপূর্বক বসবাস করে আসছে। কিন্তু এদের চলাচলের পথ মৃত এমদাদ উল্যাহর(অত্যাচারী) ঘরের সামনে দিয়ে হওয়ায় এ অত্যাচারীরা এদের চলাচলে নানাভাবে বাধা বিঘেœর সৃষ্টি করছে। এরা চলাচলের পথে টিউবওয়েল বসিয়ে ও হাঁস-মুরগীর খোঁয়াড়ের মুখ দিয়ে চলাচলের পথের কিছু অংশে কর্দমাক্ত ময়লার ড্রেন বানিয়ে রেখেছিল। এ অত্যাচারীরা তাদের ঘরের ময়লা-আবর্জনা সহ মল-মূত্র সেখানে ফেলত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এতে ভুক্তভোগী প্রতিবেশীরা এ পথ দিয়ে চলার সময় এক অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হত। তাছাড়া এ পথ দিয়ে চলার সময় ভুক্তভোগীদের গালাগাল দিত তুফানী বেগম। বিয়ে-শাদি সহ সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে আগত মেহমানরাও এ অনাচারের উপর দিয়ে পা নষ্ট করে যেতে হত। নতুন বিয়ের বেশ কয়েকজন বর-কণেকে এ অনাচার মাড়িয়ে বসত ঘরে যেতে হয়েছে। তুফানী বেগম বর-কণে বাহিত পরিবহনকে তাদের বসত ঘর পর্যন্ত যেতে দিত না। হাসপাতাল ফেরত মৃত লাশ পর্যন্ত মৃতের বসতঘর পর্যন্ত যেতে পারেনি। তুফানী বেগমের বসতঘরের সামনে থেকে মৃতের লাশ দাফন করতে হয়েছে।

সমাজপতিরা এসব অমানবিক বিষয় জেনে ৮নং জায়লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলনের মৌখিক অনুমতি নিয়ে বিগত কিছুদিন আগে ভুক্তভোগীদের ওই স্থানে একটি পাকা রাস্তা নির্মান করে দেয়। এতে তুফানী বেগম ও তার সু-পুত্র শিক্ষিত বেয়াদব এতোয়ার হোসেন আকাশ ক্ষুব্দ হয়ে নানা লম্প-জম্প শুরু করে দেয়। সে দাগনভূঞা থানায় ভুক্তভোগীদের বিবাদী করে একটি মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করে এবং ফেনী জেলার নানা প্রভাবশালীদের দিয়ে এ বিষয়ে অনৈতিক লবিং চালাতে থাকে।

সর্বশেষ সম্প্রতি এ শিক্ষিত বেয়াদব দাগনভুঞা থানায় ভুক্তভোগীদের বিবাদী করে বিবাদীদের অজান্তে একটি মিথ্যা জিডি দায়ের করে এবং দাগনভূঞার ইউএনও, এসি ল্যান্ড সহ দাগনভূঞার রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের দিয়ে অনৈতিক প্রভাব-লবিং খাটিয়ে এ জিডি কে কোর্টে পাঠাতে সমর্থ হয়। কিন্তু এ সময় পর্যন্ত ভুক্তভোগী বিবাদীদের কাছে বিষয়টি অজানাই রয়ে যায়। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দিতে দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিলেই বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।

এ বিষয়ে দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ আহাম্মেদ, ওসি (তদন্ত) পার্থ প্রতিম দেব ও মিথ্যা জিডির তদন্ত কর্মকর্তা এ.এস.আই জহিরুল হকের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এদের কথার নানা ঘোরপ্যাঁচে প্রভাবশালীদের লবিংয়ের প্রভাবে এমনটি ঘটেছে বলে প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছে। এ শিক্ষিত বেয়াদব এতোয়ার হোসেন আকাশ নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তার করেছে বলে নানা তথ্যে জানা গেছে।

৮নং জায়লষ্কর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলন, স্থানীয় মেম্বার নজরুল ইসলাম, মেম্বার মাঈন উদ্দিন শামীম, শালিশদার মেম্বার মকবুল আহাম্মদ, মাষ্টার সামছুল হুদা, শাহ আলম, নুুরুল ইসলাম, আবুল খায়ের(মেয়র), এনায়েত উল্যাহ, গিয়াস উদ্দিন, আবু সুফিয়ান, আজাদ, মো: ইউসুফ, মোমিনুল হক, নয়ন মিয়া, কাজল মিয়া, স্থানীয় দোকানদার খোকন, মোহাম্মদ আলী, অলি, সজিব, রাজু, বাড়ীর প্রতিবেশী জাফর চৌধুরী, হাসান চৌধুরী, সোহাগ চৌধুরী, সুমির চৌধুরী, অহিদ চৌধুরী, নুরে আলম স্বপন, আবুল কালাম আজাদ, নঈম উদ্দিন শোয়েব, মসিউর রহমান মিলন, ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে মোতাহের হোসেন সুমন, মাঈন উদ্দিন সবুজ, শিরিন আক্তার, মজিবা খাতুন, পেয়ারা বেগম ও টিপু সুলতানের সাথে কথা বলে তুফানী বেগম ও তার ছেলে শিক্ষিত বেয়াদবের এসব অত্যাচারের কথা জানা গেছে। এ শিক্ষিত বেয়াদব এতোয়ার হোসেন আকাশ কারো অনুরোধ বা কোন কথা মান্য করেনা বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সে রাস্তা নির্মানের বিষয়টি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলনের কাছে বিচারাধীন থাকাবস্থায় সে থানায় এ মিথ্যা জিডি করেছে বলে বহু মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) এর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইউএনও বিষয়টি জেনে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন বলে তিনি জানিয়েছে এবং এসি ল্যান্ড বিষয়টি জেনে থানায় জিডি করার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানালেন। এরা কেহই পুলিশকে প্রভাবিত করার কথা স্বীকার করেনি।

সর্বশেষ সংবাদ