তানোরে হঠাৎ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে মতবিরোধ ও কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে

ভ্রম্যমান প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে হঠাৎ মতবিরোধ ও কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তৃণমূলের অভিমত, উপজেলা আওয়ামী লীগের কতিপয় বির্তকিত, এক নেতার সেচ্ছাচারিতায় এই কোন্দল গৃহবিবাদের সূত্রপাত। তাদের অভিমত, এই কোন্দ্বল ও গৃহবিবাদ উপজেলা থেকে শুরু করে তৃণমূলে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর নেপথ্যে মদদে জনবিচ্ছিন্ন ও বির্তকিতরা ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও নিবেদিতপ্রাণ, দক্ষ, প্রবীণ ত্যাগী নেতাকর্মীরা নিজ ঘরে পরবাসী হয়ে উঠেছে। ওই নেতা তাঁর অনুসারিদের রাজনীতির মাঠে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে মনোযোগী না হয়ে নিজেরা একে অপরের বিরুদ্ধে কাঁদা ছোড়াছুড়ি ও আখের গোছাতে ব্যস্ত রয়েছে। ফলে রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিস্তেজ ও প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।

তানোরে উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখন মুলত স্থানীয় সাংসদ ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধূরীকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। তিনি এলাকায় থাকলে আওয়ামীলীগ আছে, আর না থাকলে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামীলীগ গণমাধ্যম বান্ধব সরকার হলেও বির্তকিত ওই নেতার এমন কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যাপক নেতিবাচক মনোভাব সুষ্টি ও দলের তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়। এছাড়াও সাধারণের মধ্যে গণমাধ্যম-কর্মী-জনবান্ধব ও সৎ রাজরৈতিক নেতা হিসেবে এমপি ওমর ফারুক চৌধূরীর যে আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা রয়েছে ওই নেতার এসব কর্মকান্ডে সেটিও সাধারণের মধ্যে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে এর দায় নিবে কে ?।
অন্যদিকে এসব নেতারা তোপের মূখে পড়ার ভয়ে তৃণমুল নেতাকর্মী-সমর্থকদের এড়িয়ে চলছে। যে কারণে প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের যোজন যোজন দুরুত্ব সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিভিন্ন কমিটিতে বির্তকিত, গ্রহণযোগ্যহীণ ও সুযোগসন্ধানীরা গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিলেও, নিবেদিত প্রাণ, প্রবীণ, ত্যাগীরা ছিটকে পড়েছে। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে দলীয় কর্মকান্ড এমনকি কেন্দ্রীয় কর্মসূচী ঢিলেঢালা ভাবে পালিত হচ্ছে। দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ভেঙ্গে পড়েছে চেইন অব কমান্ড। অবমূল্যায়ন করা হয়েছে দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন নেতাকর্মীদের। এসব কারণে তৃণমুলের নেতাকর্মীরা এই নেতৃত্ব মেনে নিতে পারছেন না। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
আরো জানা গেছে, প্রবীণ ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, গ্রহণযোগ্যহীণ ও বির্তকিত নেতাকর্মীদের নানা উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের তদারকির দায়িত্ব দেয়া, নেতাকর্মীদের সময় না দিয়ে নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকা ও জামায়াত-বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সঙ্গে আঁতাতসহ এই নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। দলের শৃংখলা বা চেইন অব কমান্ড বলে কিছুই নেই। তিনি বর্তমানে সুযোগসন্ধানী ও নব্য আওয়ামী লীগারদের সামলাতেই ব্যস্ত। আওয়ামী লীগের প্রবীণ ত্যাগী ও নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীদের নিয়ে তার ভাবার সময় নেই। তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক প্রবীণ নেতা এভাবেই দলের বর্তমান দুরাবস্থার কথা তুলে ধরেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা আরো বলেন, বির্তকিত নেতা পদের ক্ষমতা ব্যবহার করে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত রয়েছেন। কিন্তু সাংগঠনিক কার্যক্রম, বর্ধিতসভা, কর্মীসভা ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখ ও ভালো-মন্দ দেখার তার কোনো সময় নেই। তারা বলেন, আর যাই হোক আওয়ামী লীগের মতো বড় ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন এভাবে চলতে পারে না। সংগঠনের তেমন কোনো কার্যক্রম নেই। সভাপতি গোলাম রাব্বানিসহ অনেক সিনিয়র নেতা রয়েছেন অথচ তাঁদের কোন মূল্যায়ন করা তো দুরের কথা, খবর পর্যন্ত নেয়া হয় না এমনকি কৌশলে সাংগঠনিক কর্মকান্ডে তাদের দুরে রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া দলের সাংগঠনিক কাজে দক্ষদের কোন সুযোগ দেয়া হচ্ছে না ও প্রবীণ, ত্যাগী-নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীরা অবমূল্যায়ণের অভিযোগ তুলে নিস্ক্রিয় রয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

সর্বশেষ সংবাদ