ইউপি সদস্যকে শপথ পড়াতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট-লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের চলবলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক মোজাম কে উচ্চ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে শপথ করাতে কালক্ষেপণের অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত আদালতের নির্দেশ মোতাবেক শপথ পড়াতে নিরুপায় হয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ন্যায়বিচারের প্রার্থনা করেছেন তিনি। রোববার  (২৬ জুন ) রাতে কালীগঞ্জ রিপোর্টাস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক মোজাম।
এতে হাইকোর্টের রীট পিটিশন মামলায় যৌথবেঞ্চের বিচারপতি চলতি বছরের গত ১২ মার্চ শুনানী অন্তে ১৪ মার্চ ৪৫৬১/২০২২ নং রীট পিটিশনকারী মোজাম্মেল হক মোজাম কে রায় ঘোষণার ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে চলবলা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সাধারণ সদস্য হিসেবে শপথ অনুষ্ঠানের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। হাইকোর্টের এমন একটি নির্দেশনাকে অমান্য করে শপথ গ্রহনে আইনি জটিলতা দেখিয়ে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ঐ ইউপি সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে ইউপি সদস্য মোজাম বলেন, সারাদেশে চতুর্থ দফায় অনুষ্ঠিতব্য লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের ৯নং তেতুলিয়া ওয়ার্ডে টিউবওয়েল প্রতিক নিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার পর শপথ গ্রহণের পূর্বে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে একটি মিথ্যা মামলার কারণে যথাসময়ে শপথ গ্রহণ করতে পারি নাই। পরে উক্ত ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য পদটি শুন্য ঘোষনা করে ভোট গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করেন। ইউপি সদস্য মোজাম বলেন পুনরায় নির্বাচনের বিষয়টি জানতে পেরে পুনঃনির্বাচন বন্ধে আমি হাইকোর্টে মামলা করলে হাইকোর্টের বিচারিক আদালত ২০২৪ সাল পর্যন্ত পুনঃনির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেন। এরপর আমি শপথ গ্রহণের জন্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন মামলা করি। মামলায় শুনানী শেষে মহামান্য হাইকোর্ট ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে আমাকে শপথ পাঠ করাতে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেন কিন্তুু তিনি আমার শপথ বাক্য পাঠ না করিয়ে নানা রকম টালবাহানা শুরু করেন।
 সংবাদ সম্মেলনে মোজাম বলেন, টালবাহানার এক পর্যায়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে জিপি লালমনিরহাটের সহিত পরামর্শ করে শপথ গ্রহণের পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান। কিন্তুু গত ২২ শে জুন নুরুল ইসলাম জিপি লালমনিরহাট স্বাক্ষরিত একটি পত্রে শপথ গ্রহণে পুনরূপ আইনি জটিলতা নেই বলে উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি পত্র প্রদান করেন যাহার স্বারক নং ৮৮ এবং গত ২৫ শে জুন একই ব্যক্তি স্বাক্ষরিত আরেকটি পত্রে উল্লেখ করেছেন আইনি জটিলতা রয়েছে। একই ব্যক্তির স্বাক্ষরিত দুটি দু’রকম আইনি ব্যাখ্যার কারণে এমন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
হাইকোর্টের কোন রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ফাইলিং হলে উক্ত আপিলের শুনানীর আগ পর্যন্ত বিচারকদের পূর্ণরূপ রায় বা নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত পূর্বের রায় বলবৎ থাকার নিয়ম থাকলেও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহামান্য হাইকোর্টের দেয়া রায় কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি হাইকোর্টের রায়কে অবমাননা করছেন বলেও দাবি করেন ঐ ইউপি সদস্য।
নির্বাচন পরবর্তী গেজেটের বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কমিশনার মাহবুবা রহমান জানান, মোজাম্মেল হক মোজাম নির্বাচিত হয়েছেন এখন তার নামে সরকারী গ্রেজেট প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তিনি শপথ না নেওয়ায় উপনির্বাচনে শৈলান চন্দ্র ভোটে অংশগ্রহন করে বিজয়ী হন। তবে মোজাম্মেল হকের দায়ের করা হাইকোর্টের রায়ে উপনির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেওয়ায় তিনি এখনও সরকারী কোন গেজেট পাননি।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহির ইমাম জানান, আইনি জটিলতা থাকায় মোজাম্মেল হক মোজাম কে ইউপি সদস্য হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করানো সম্ভব হয়নি। অন্য পক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন ফাইল করার বিষয়ে নির্দেশনা আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ