নৌকায় ভোট না দিলে হিন্দু পরিবারকে ভারতে পাঠানোর হুমকি আ”লীগ নেতার

 জেলা প্রতিনিধি,লালমনিরহাট-নৌকায় ভোট না দেওয়া হলে হিন্দু পরিবারকে দেশছাড়া করে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার আওয়ামীলীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
রোববার(২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে  হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ব্রজেন্দ্রনাথ(৪৩)।
অভিযুক্ত শ্যামল সিদ্দিকী জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও স্থানীয় এমপি মোতাহার হোসেনের ব্যাক্তিগত কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে পাউবোর জমি দখল করে হোটেল রেস্তোরা খোলার অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারী ব্রজেন্দ্রনাথ উপজেলার পুর্ব সিন্দুর্না গ্রামের দেবেশ্বর বর্ম্মণের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,  হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৯ ডিসেম্বর ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩জন প্রার্থী। আওয়ামীলীগের নৌকা প্রার্থী নুরল আমীন ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে প্রচারনার শুরু থেকে প্রচারনায় বাঁধা ও হামলা ভাংচুরের অভিযোগ করে আসছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুল ইসলাম আরিফ।
গত শনিবার(২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ৮/৯টি মোটর সাইকেলের বহর নিয়ে নৌকা প্রতীকের সমর্থনে প্রচারনায় পুর্ব সিন্দুর্না গ্রামে যান পাশ্ববর্তি গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। এ সময় পুর্ব সিন্দুর্না গ্রামের লোকজনকে ২৯ ডিসেম্বর নৌকায় ভোট দিতে বলেন। যার ভোট খুশিমতো দিবো এমন কথায় ওই গ্রামের ব্রজেন্দ্রনাথ ও তার স্ত্রীর উপর ক্ষিপ্ত হন তারা। তাদেরকদে হুমকি দিয়ে’ এরা গরুর মাংস খাওয়া হিন্দু, এদেরকে গরু খাওয়ায়ে মুসলমান বানাতে হবে, ব্যাটাদের বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া যাবেনা’ ইত্যাদি গালিগালাজ করেন।
এ সময় শ্যামলের লোকজন তাদের উপর চড়াও হয়ে লোহার রড আর ডেগার উচিয়ে হুমকী দেন। বলেন, “ভোট না দিলে পিটায়ে হাত পা ভেঙ্গে দেশ থেকে বিড়ারিত করা হবে। এখানে থাকলে নৌকায় ভোট দিতে হবে।” এ ঘটনায় পুরো এলাকা ভিত হয়ে পড়েছে বলে দাবি করে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাসহ ন্যায় বিচার চেয়ে রোববার হাতীবান্ধা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ব্রজেন্দ্রনাথ।
এ অভিযোগে গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলসহ ২২জনকে বিবাদি করা হয়েছে। ইতিপুর্বেও এ গ্রামে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। আহত হয়েছেন অনেকেই। দুই দিনের হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ২২জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ভোটের সুষ্ঠ পরিবেশ বিঘ্নিত করতে পুরো এলাকায় আতংক ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্ঠি করা হয়েছে বলেও দাবি করেন স্থানীয়রা।
অভিযোগকারী ব্রজেন্দ্রনাথ বলেন, শ্যামল ও তার লোকজন দুই দফায় হুমকি দিয়েছে। গরুর মাংস খাওয়ার মুসলমান বানাতে চায়, দেশ ছাড়া করতে চায়। আমরা শুধু বলেছি ইচ্ছামতো আমরা ভোট দিবো তাই জন্য মহিলাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতা ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিককে একাধিকবার মোবাইলে কল ও খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি উত্তর দেননি।
হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলমকেও কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, উপ নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ভয়ভীতি বা অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ