এরশাদ-রওশনকে এক গাড়িতে চড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদকে তার স্বামী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে একই গাড়িতে চড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। রাজধানীর যানজট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন। গত ৬ জুলাই যানজটের কারণে বিরোধী দলীয় নেতা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ইফতার মাহফিলে উপস্থিত হতে পারেন নি। ওইদিন হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ ঠিকই যথাসময়ে উপস্থিত ছিলেন। দেশের রাজনীতিবিদদের সম্মানে প্রধানমন্ত্রী ওই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন।গতকা বুধবার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় যানজটও বেড়েছে এমন বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রসঙ্গটি টানেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি রওশন এরশাদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এই যে সেদিন আপনি উপস্থিত হতে পারলেন না তার কারণ দুটি আলাদা গাড়ি ব্যবহার। আপনিও যদি এরশাদ সাহেবের গাড়িতে করে একসঙ্গে আসতেন, তা হলে কিন্তু দুজনই পৌঁছাতে পারতেন। এসময় সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকে মিটিমিটি হাসতে দেখা গেলেও রওশন এরশাদ ছিলেন খানিকটা গম্ভীর।
দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তা উল্লেখ করতে গিয়েই মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে, গাড়ির ব্যবহার বেড়েছে বলে তার বক্তৃতায় জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা নিম্ন মধ্যম থাকতে চাই না, উন্নত অর্থনীতির দেশ হতে চাই, উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত হতে চাই। আগামি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে।
নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে আনীত প্রস্তাব সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এ জন্য দেশবাসীসহ সবার সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য এ দেশের জনগণ। বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছি বলেই উন্নতি করা সম্ভব হয়েছে।এজন্য দেশবাসীসহ সরকারের সব স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন করেছি। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। বাবার বড় সন্তান হিসেবে তার পাশে থেকে অনেক কিছুই দেখেছি। কীভাবে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হয়। আমরা এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে ক্ষুধা, দারিদ্র্য থাকবে না। সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের একটা লক্ষ্য ছিলো বাংলাদেশের মানুষ যেন কুড়ে ঘরে না থাকে। আজ সেই কুড়ে ঘর নেই। কুড়ে ঘরের পরিবর্তে টিনের ঘর দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কারও কাছে হাত পাততে চাই না। আমরা আজকে যা অর্জন করেছি, তাতে অনেক বাধা এসেছে, জ্বালাও পোড়াও হয়েছে। এগুলো না থাকলে আজ প্রবৃদ্ধির হার সাতে পৌঁছাতো।
হাসিনা বলেন, দেশের মানুষকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কারণ তারা জ্বালাও পোড়াও প্রত্যাখান করেছে। ফলে সহিংসতা বন্ধ হয়েছে। আমরা এখন কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করতে চাই। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার জন্য সবার সহযোগিতা আরও একবার দরকার বলেও জানান তিনি।
২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই উদযাপনের সময় আমরা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। আশা করি আমরা এটি করতে পারবো।

সর্বশেষ সংবাদ